আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় কিশোরগঞ্জ জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত।
কিশোরগঞ্জ জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত:-
কিশোরগঞ্জ জেলা বালিশ মিষ্টি, নকশি পিঠা , শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান এর জন্য বিখ্যাত। এছারাও রয়েছে অষ্টগ্রামের সাদা পনির, লালডিঙ্গি পান এবং বিভিন্ন প্রকার পিঠা মণ্ডা মিঠাই এর জন্য বিখ্যাত কিশোরগঞ্জ। ছোট বড় প্রায় ১২২ টি হাওর রয়েছে কিশোরগঞ্জ জেলায়।

বালিশ মিষ্টি
বালিশ মিষ্টি বাংলাদেশের নেত্রকোণা জেলার একটি প্রসিদ্ধ মিষ্টি। এটি আকারে বালিশের মত বড় না হলেও দেখতে অনেকটা বালিশের মত, এবং এর উপরে ক্ষীরের প্রলেপ থাকাতে একটি আবরণীসমেত বালিশের মত দেখায়। এই মিষ্টি গয়ানাথের বালিশ নামেও পরিচিত।
বালিশ মিষ্টির জনক গয়ানাথ ঘোষাল। হিন্দুদের মধ্যে ঘোষ পরিবার মিষ্টি তৈরিতে বিখ্যাত। নেত্রকোণা শহরের বারহাট্টা রোডের ‘গয়ানাথ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার’-এর স্বত্বাধিকারী গয়ানাথ ঘোষ শত বছরেরও বেশি সময় আগে বালিশ মিষ্টি উদ্ভাবন করেন। গয়ানাথের স্বপ্ন ছিল নতুন কোন ধরনের মিষ্টি আবিষ্কার করা।
একদিন তিনি বিশাল সাইজের একটি মিষ্টি তৈরি করলেন এবং ক্রেতাদের খেতে দিলেন এবং ক্রেতারা খুব প্রশংসা করলো। এর আকার অনেকটা কোল বালিশের মতো। তাই ক্রেতাদের পরামর্শে মিষ্টিটির নাম রাখেন বালিশ। স্বাদে অতুলনীয় হওয়ায় অল্পদিনেই সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে বালিশের নাম। এর উদ্ভাবক হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পান গয়ানাথ ঘোষও। তাই এক সময় তার নামটিও জড়িয়ে যায় বালিশের সঙ্গে। লোকমুখে বালিশের নাম হয়ে ওঠে ‘গয়ানাথের বালিশ’। সে সময়ে শুধু তার দোকানেই এই মিষ্টি বিক্রি হতো। কিন্তু এখন তার দোকান ছাড়াও অন্যান্য দোকানেও বিক্রি হয় বালিশ মিষ্টি।

নকশি পিঠা
নকশি পিঠা এক ধরনের নকশা করা পিঠা, যা বাংলাদেশে প্রচলিত। এটি এক প্রকার লোকশিল্প, যা মেয়েলি শিল্প নামেও পরিচিত। এই পিঠার গায়ে বিভিন্ন ধরনের নকশা আঁকা হয় বা ছাঁচে ফেলে পিঠাকে চিত্রিত করা হয় বলে় একে নকশি পিঠা বলা হয়।
শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান
কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত বাংলাদেশ তথা উপমহাদেশের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ ও ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। প্রতিবছর এ ময়দানে ঈদ-উল-ফিতর ও ঈদুল আযহা নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। কালের স্রোতে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানটি পরিণত হয়ে উঠেছে একটি ঐতিহাসিক স্থানে।
বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত দিনাজপুরের “গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানের” পর দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় এখানে। এ ময়দানের বিশাল জামাত গৌরবান্বিত ও ঐতিহ্যবাহী করেছে কিশোরগঞ্জকে। বর্তমানে এখানে একসঙ্গে তিন লক্ষাধিক মুসল্লি জামাতে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শুরুর আগে শর্টগানের ফাঁকা গুলির শব্দে সবাইকে নামাজের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য সঙ্কেত দেওয়া হয়। কিশোরগঞ্জ শহরের পূর্বে নরসুন্দা নদীর তীরে এর অবস্থান। বর্তমানে এই ঈদগাহের ইমাম ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ।

আরও পড়ুনঃ
