ভৈরবে শয়নকক্ষ থেকে মা ছেলের লাশ উদ্ধার,কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের শম্ভুপুর গ্রামে শয়নকক্ষ থেকে মা ও ছেলের লাশ উদ্ধার হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে নিজ ঘরে তাঁদের লাশ পড়ে ছিল। মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন জোনাকী বেগম (২৪) ও জোনাকীর সাড়ে তিন বছর বয়সী ছেলে মো. আলিফ।শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ভাষ্য, জোনাকী তাঁর শিশুসন্তানকে নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে বাবার বাড়ির দাবি, জোনাকীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

ভৈরবে শয়নকক্ষ থেকে মা ছেলের লাশ উদ্ধার
জোনাকীর পরিবারের সদস্যরা বলেন, জোনাকীর স্বামীর বাড়ি ভৈরবের শম্ভুপুর গ্রামে। স্বামী ফরহাদ মিয়া ইতালীপ্রবাসী। জোনাকীর বাড়ি একই উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের কালিকাপ্রসাদ গ্রামে। বাবার নাম রইছ উদ্দিন। সাত বছর আগে জোনাকীকে বিয়ে করেন ফরহাদ। ফরহাদের এটি দ্বিতীয় বিয়ে, জোনাকীর প্রথম। দাম্পত্য জীবনে আলিফ তাঁদের একমাত্র সন্তান। ফরহাদ সর্বশেষ এক বছর তিন মাস আগে ছয় মাসের জন্য দেশে এসেছিলেন। বিয়ের শুরু থেকেই জোনাকীর
দাম্পত্য সুখ ছিল না। এ ছাড়া তাঁকে শাশুড়ি নানাভাবে মানসিক নির্যাতন চালাতেন। এতে জোনাকী অতিষ্ঠ ছিলেন। এ বিষয়ে স্বামীর ভূমিকা ছিল নীরব। এমনকি মায়ের পক্ষ নিয়ে উল্টো স্ত্রীকে গালমন্দ করতেন ফরহাদ। এই অবস্থায় আজ বেলা ১১টার দিকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন ফোন দিয়ে জানান জোনাকী তাঁর শিশুসন্তানকে নিয়ে ঘরের ধরনায় ঝুলে আত্মহত্যা করেন। পরে শ্বশুরবাড়ির লোকজন জোনাকী ও আলিফকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, জোনাকীর মা ও বোনেরা মাতম করছেন। মা সালেহা বেগম বলেন, মেয়ে কোনোভাবেই আত্মহত্যা করতে পারেন না। মেয়েকে মেরে ফেলা হয়েছে। হত্যার পেছনে শাশুড়ি বেবী বেগমের হাত রয়েছে বলে দাবি সালেহার।সালেহা বলেন, ‘আমার মেয়ে কয়েক দিন পরপর সংসারের অশান্তির কথা কইত। শাশুড়ির বিরুদ্ধে নির্যাতন চালানোর কথা কইত। সন্তানের কথা ভাইভা সংসার টিকাইয়া রাখার চেষ্টা করত আমার মেয়ে।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নওরিন ফাতেমা বলেন, বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে তাঁদের হাসপাতালে আনা হয়। তখন মা ছেলে দুজনই মৃত ছিলেন। দুজনের গলায় দাগ পাওয়া গেছে।মরদেহের সুরুতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ভৈরব থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাজিব আহমেদ বলেন, জোনাকীর শ্বশুরবাড়ি থেকে আত্মহত্যার কথা জানানো হয়েছে। তবে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে লাশ পুলিশ নামায়নি, শ্বশুরবাড়ির লোকজন নামিয়েছেন। দুজনের গলায় দাগ রয়েছে।
জোনাকীর শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের মন্তব্য জানতে বাড়ি গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। শাশুড়িসহ সবাই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান নিয়েছেন। তবে প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, শাশুড়ির সঙ্গে জোনাকীর সম্পর্ক ভালো ছিল না। প্রায়ই বিবাদ হতো। আত্মহত্যার কথা শুনে প্রতিবেশীরা ওই বাড়িতে গিয়ে দেখেন লাশ মেঝেতে শুইয়ে
রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন:
1 thought on “ভৈরবে শয়নকক্ষ থেকে মা ছেলের লাশ উদ্ধার”